December 22, 2024, 3:29 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
গত শুক্রবার কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া মহাবিদ্যালয়ে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় এক যুব লীগ নেতা ও তার ৩ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায় কলেজের অধ্যক্ষ ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির মধ্যে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল যার মধ্যে কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে সভাপতির অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ কলেজটিতে সাম্প্রতিক নিয়োগে অনিয়ম প্রভৃতি ছিল।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দখল নিতে তৃতীয় পক্ষ পরিস্থিতিটির সুযোগ নিতে যতিনের আবক্ষ ভাঙচুর করে।”
পুুলিশ বলছে কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- কয়া ইউনিয়ন ইউনিট যুবলীগের সভাপতি আনিচুর রহমান (৩৫), সবুজ হোসেন (২০) ও হৃদয় আহমেদ (২০)। তবে অপর দু’জনের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া না গেরেও পুলিশ বলছে এরা আনিচুরের সহযোগী। শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এসপি জানান এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাচ্চু নামের আরেকজন পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতার তিনজনকে কুষ্টিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হলে ম্যাজিস্ট্রেট সেলিনা খাতুন তাদেরকে জেলে প্রেরণ করে।
এসপি তানভীর আরাফাত বলেন, তদন্তে আমার যেটা এখন পর্যন্ত জেনেছি সেটি হলো কলেজের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। কয়া মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিজামুল হক চুন্নু এবং অধ্যক্ষ হারনুর রশিদের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব বিরাজমান। এ ঘটনার চাক্ষুস প্রমাণ রয়েছে। কলেজের দারোয়ান ঘটনাটি স্ব-চোখে দেখেছে। তারা রাত ১১ টার দিকে সেখানে অব¯’ান নিয়েছিল আড্ডার ছলে। পরে রাত পৌঁনে ১টার দিকে হাতুড়ি দিয়ে তিনটি স্থানে তিনটি আঘাত করে। পরে তারা মোটরসাইকেলে স্থান ত্যাগ করে।
এসপি বলেন চার জন সরাসরি সম্পৃক্ত। তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের শীঘ্রই ধরা হবে এবং আদালতে সোপর্দ করা হবে।
কলেজের গভর্নিং বডির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছিলেন, গত বছর কলেজে বেশ কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে যে নিয়োগে সভাপতি নিজামুল হক অর্থ লেনদেন করেছেন। এ ছাড়া নিজামুল আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত। তিনি অকারণে কলেজের বিভিন্ন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছিলেন। নিজামুল প্রায় ৫ বছর কলেজগুলির সভাপতি আছেন।
যুবলীগের সভাপতি আনিসের বাড়ি কলেজের পাশের রায়ডাঙ্গা গ্রামে। এখানে আনিস দীর্ঘদিন ধরে ওই কলেজের সভাপতি হওয়ার জন্য লবিং করছিল।
এসপি বলেছিলেন, “আমি সরাসরি বলতে চাই না, কারণ পুলিশ অভিযুক্তদের রিমান্ড নেবে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে।” যাইহোক, বেশ কয়েকটি সমস্যাকে সামনে রেখে, একটি গোষ্ঠী এটিকে আরও গরম করার জন্য একটি বাজে উপায়ের সহায়তা নেয়, তারা বাঘা যতিনের মতো এক মহামানুষের আবক্ষে আঘাত করে বসে।
এসপিট জানান জড়িতের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা যারা রয়েছে, তাদেরও খুব শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে এবং আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এদিকে, শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় কয়া মহাবিদ্যালয়ে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় কুষ্টিয়া শহরের থানা মোড়ে জেলা জাসদের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে জেলা জাসদের নেতারা।
শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ২ টার দিকে দুর্বৃত্তরা একইভাবে হাতুড়ি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। পরে ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। পরদিন শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসার দুই ছাত্র ও তাদের সহযোগী দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
Leave a Reply